সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এডওয়ার্ড মাইকেল বিয়ার গ্রিল্‌স একজন অসাধারণ বিক্তিত ।

এডওয়ার্ড মাইকেল গ্রিল্‌স (বিয়ার গ্রিলস)
জন্ম :   ৭ জুন ১৯৭৪ (বয়স ৪০) , যুক্তরাজ্য
পেশা :  স্কাউট প্রধান, অভিযাত্রিক, লেখক, বক্তা, টেলিভিশন উপস্থাপক
দম্পতি :  সারা কেনিংস
সন্তান  :   জেস, মার্মাডিউক, এবং হাক্‌লবেরি
পিতা-মাতা  :   স্যর মাইকেল গ্রিলস, লেডি গ্রিলস


ব্যক্তিগত জীবন :

বিয়ার গ্রিলস উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডোনাঘাডি এলাকায় ৪ বছর বয়স অবধি শৈশব অতিবাহিত করেছেন। এরপর তিনি তাঁর পরিবারের সাথে বেমব্রিজ অঞ্চলে যান। কনজারভেটিভ পার্টির মরহুম রাজনীতিবিদ স্যার মাইকেল গ্রিলস ছিলেন বিয়ারের পিতা। বিয়ারের মা হলেন লেডি গ্রিলস যার মা প্যাট্রিসিয়া ফোর্ড ছিলেন পেশায় একজন রাজনীতিবিদ এবং সংসদ সদস্য। বিয়ার গ্রিলসের একজন বড় বোন রয়েছেন, তাঁর নাম লারা ফাউসেট। লারা পেশায় একজন টেনিস কোচ। লারাই বিয়ার গ্রিলসের “বিয়ার” নামটি দেন যখন তাঁর বয়স কেবল এক সপ্তাহ।

গ্রিলস ইটন হাউস, লুডগ্রুভ স্কুল, ইটন কলেজে শিক্ষা লাভ করেছেন। ইটন কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি সেখানকার প্রথম পর্বতারোহণ ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। অতি অল্প বয়সেই গ্রিলস তাঁর বাবার কাছ থেকে পর্বতারোহণ এবং নৌচালনা শিখেছেন। তাঁর বাবা নৌচালনায় দক্ষ ছিলেন। কৈশোরেই গ্রিলস স্কাইডাইভিং এবং কারাতে শেখেন। তিনি যোগ ও নিনজৎসু চর্চা করেন। আট বছর বয়সে তিনি কাব স্কাউট হন। গ্রিলস ইংরেজি, স্প্যানীয় এবং ফরাসি ভাষা জানেন। তিনি ধর্মে একজন খ্রিস্টান, এবং তিনি ধর্মবিশ্বাসকে তাঁর জীবনের “মেরুদন্ড” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিয়ার গ্রিলস ২০০০ সালে সারা গ্রিলসকে বিয়ে করেন। তাঁদের তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। তাঁদের নাম জেস, মার্মাডিউক এবং হাক্‌লবেরি।


সামরিক বাহিনীতে চাকরি

বিদ্যালয় জীবন শেষ হবার পর বিয়ার গ্রিলস ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার মনঃস্থ করেন। এসময় তিনি সিক্কিম অঞ্চলে হিমালয়ে হাইকিং করেন। গ্রিলস ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ইউনাইটেড কিংডম স্পেশাল ফোর্স রিজার্ভে কাজ করেন। স্পেশাল এয়ার সার্ভিসে তিনি ১৯৯৬ পর্যন্ত তিন বছর কাজ করেন। ১৯৯৬ সালে জাম্বিয়ায় গ্রিলস একটি প্যারাশুট দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন। এসময় গ্রিলসের চিরতরে হাঁটার ক্ষমতা বন্ধের সম্ভাবনা দেখা দেয়। পরবর্তী বারো মাস গ্রিলস মিলিটারির সকল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকেন। ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন এবং তাঁর শৈশবের লালিত স্বপ্ন মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের নেশায় উদ্বেলিত হন। মানব সেবায় অবদান রাখার জন্যে ২০০৪ সালে গ্রিলসকে সম্মানসূচক পদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডারে পদোন্নতি দেয়া হয়।
এভারেস্ট জয়

১৯৯৮-এর ১৬ মে বিয়ার গ্রিলস তাঁর শৈশবের লালিত স্বপ্ন মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। আট বছর বয়সে যখন তাঁর বাবা তাকে এভারেস্টের একটি ছবি উপহার দেন, তখনই গ্রিলসের মনে এভারেস্ট জয় করার ইচ্ছা জাগে। এভারেস্ট জয়ের মাধ্যমে মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ সর্বকনিষ্ঠ ব্রিটিশ হিসেবে এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড করেন। তাঁর প্যারাশুট দুর্ঘটনার আঠারো মাস পরেই তিনি এভারেস্টে আরোহণ করেন। জেমস অ্যালেন নামের একজন অস্ট্রেলীয় নাগরিক ২২ বছর বয়সে একটি দলের সাথে এভারেস্ট জয় করেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে এভারেস্ট জয় করে রব গন্টলেট নামের এক ব্রিটিশ তরুণ গ্রিলসের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন।

গণমাধ্যম

বিয়ার গ্রিলস টেলিভিশন জগতে প্রবেশ করেন একটি ডিওডোরেন্টের বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত সেনাবাহিনীর মাদক-বিরোধী টিভি ক্যাম্পেইনেও বিয়ার গ্রিলস উপস্থিত হন। এছাড়া বিশ্বখ্যাত হ্যারডস দোকানের বিজ্ঞাপনেও গ্রিলস অংশগ্রহণ করেন। গ্রিলস বেশ কিছু টেলিভিশন প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রাইডে নাইট উইথ জোনাথন রোজ, অপরাহ উইনফ্রে শো, দ্য টুনাইট শো উইথ যে লেনো, দ্য লেট শো ডেভিড লেটারম্যান ইত্যাদি। গ্রিলস ইন্টারনেটে পাঁচ পর্বের একটি সিরিজে উপস্থিত হন যেখানে তাকে নগর-জীবনে টিকে থাকার কৌশল দেখাতে হয়। ওয়ার্নার ব্রাদার্স গ্রিলসকে তাদের ক্ল্যাশ অফ দ্য টাইটানস চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল।

বিয়ারের প্রথম রচিত বইয়ের নাম ফেসিং আপ। এটি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান পায়। এটি যুক্তরাষ্ট্রে দ্য কিড হু ক্লাইম্বড এভারেস্ট নামে প্রকাশিত হয়। এভারেস্টে তাঁর অভিযান এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে রচিত দ্বিতীয় বই ফেসিং দ্য ফ্রোজেন অশেন ২০০৪ সালে উইলিয়াম হিল স্পোর্টস বুক অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। গ্রিলসের তৃতীয় বই বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস; এটি পৃথিবীর বেশ কিছু প্রতিকূল পরিবেশে তাঁর টিকে থাকার অভিজ্ঞতা অবলম্বনে রচিত হয়েছে। এটি সানডে টাইমস টপ টেন বেস্ট সেলার তালিকায় স্থান পায়। এছাড়া তিনি বিয়ার গ্রিলস আউটডোর অ্যাডভেঞ্চার নামে একটি বই লিখেন। ২০১১ সালে বিয়ার গ্রিলস আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। এর নাম মাড, সোয়েট অ্যান্ড টিয়ারস: দ্য অটোবায়োগ্রাফি। দুর্গম স্থানে টিকে থাকার কৌশলের উপর শিশু-কিশোরদের জন্য তিনি বেশ কটি বই রচনা করেন। এগুলো হল মিশন সারভাইভাল: গোল্ড অফ দ্য গডস, মিশন সারভাইভাল: ওয়ে অফ দ্য ওলফ, মিশন সারভাইভাল: স্যান্ডস অফ দ্য স্করপিয়ন, মিশন সারভাইভাল: ট্র্যাক্স অফ দ্য টাইগার।

এস্কেপ টু দ্য লিজিওন

২০০৫ সালে বিয়ার গ্রিলস এবং তাঁর এগারো সহযোগীর ফ্রেঞ্চ ফরেন লিজিওনের আওতায় সাহারা মরুভূমিতে প্রশিক্ষণের উপর এস্কেপ টু দ্য লিজিওন নামে একটি টেলিভিশন শো নির্মিত হয়। এটি যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এছাড়া ২০০৮-এও এটি যুক্তরাজ্যের হিস্টোরি চ্যানেলে পুনঃপ্রচারিত হয়।
 
বর্ন সারভাইভর/ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড
ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড এর একটি পর্বের চিত্রায়নের পূর্বমূহুর্তে তোলা একটি ছবি।

যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোর-এ বর্ন সারভাইভর: বিয়ার গ্রিলস নামে গ্রিলস একটি প্রোগ্রাম করে থাকেন। এটি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড নামে প্রচারিত হয়। এছাড়া ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার অনেক দেশীটি আল্টিমেট সারভাইভাল নামে প্রচারিত হয়। এই অনুষ্ঠানে দেখানো হয়, বিয়ার গ্রিলসকে কোন প্রতিকূল পরিবেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই পরিবেশে প্রতিকূলতার মধ্যে কীভাবে বে৬চে থাকাওতে হয় তা গ্রিলস প্রদর্শন করে। ২০০৬ সালে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড শুরু হয় এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রোগ্রামে পরিণত হয়। বিশ্বজুড়ে ১.২ বিলিয়ন মানুষ এই অনুষ্ঠান দেখে থাকে।

এই অনুষ্ঠানে দেখায় বিয়ার গ্রিলস সুউচ্চ পর্বত-শৃঙ্গে আরোহণ করছে, হেলিকপ্টার থেকে প্যারাশুট নিয়ে নামছে, প্যারাগ্লাইডিং করছে, বরফ-আবৃত পাহাড়ে উঠছে, গভীর অরণ্যের আগুনের মধ্য দিয়ে দৌড়াচ্ছে, সাপ পোকা-মাকড় কীট-পতঙ্গ খাচ্ছে, মরুভূমির কড়া রোদ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রস্রাব-সিক্ত টিশার্ট দিয়ে মাথা আবৃত করছে, সাপের খোলসের মধ্যে প্রস্রাব জমিয়ে রেখে পান করছে, হাতির মল নিঃসৃত তরল পান করছে, হরিণের বিষ্ঠা খাচ্ছে, কুমিরের সাথে যুদ্ধ করছে, সীলের চামড়াকে পোশাকের মত বানিয়ে সাঁতারের সময় হ্রদের হিমশীতল পানি থেকে পরিত্রাণের জন্য তা পরিধান করছে, জলপ্রপাত থেকে ঝাপিয়ে পড়ছে, বাঁশ দিয়ে ভেলা বানিয়ে সাগর পাড়ি দিচ্ছে, সাগরের তলদেশে কোন প্রকার যন্ত্রের সাহাযে ছাড়াই মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী শিকার করে খাচ্ছে, প্রতিকূল পরিবেশে আশ্রয় হিসেবে স্থানীয় হিনিস দিয়ে থাকার জায়গা বানাচ্ছে এবং দুর্গম পরিবেশে টিকে থাকার জন্য এমনি আরো উপায় ও কৌশল সে অবলম্বন করছে।

২০১২ এর মার্চে ডিসকভারি চ্যানেল বিয়ার গ্রিলসের সাথে চুক্তি-সংক্রান্ত মতৈক্যের কারণে ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড অনুষ্ঠান নির্মাণ বন্ধ করে।

সবাই ভাল থাকবেন ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Windows 7 & 8 এ নিন Windows 9 এর স্বাদ !!!

আজ আমি আপনারদেরকে এমন একটা সফটওয়্যার / স্কিন প্যাক এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব, যা আপনাদের সবারই খুব ভাল লাগবে আমি আশা করি । আমরা জানি  Windows 9 আসতে এখনো অনেক বাকি । তাই বলে কি আমরা তার স্বাদ আগে থাকেই পেতেপারি না ? যারা  Windows 7 & 8 ব্যবহার করতে করতে ক্লান্ত তাদের অবশই ভাল লাগবে । এই সফটওয়্যার টিতে Windows 9 এর সব ফিসারই পাবেন । তাহলে এর দেরি কেন, ডাউনলোড করুন আর মজা নিন !!! Windows 9 Skin Pack Here is Windows 9 , hope you like this concept and enjoy it, have fun!  Transform  Windows 8 and 7  to Windows 9 Win8:   Download Win7:  Download যারা ডাউনলোড করতে পারছেন না, তারা নিচের ছবি টি দেখুন । ধন্যবাদ ! 

Kazi Nurul Islam - Biography

 Kazi Nurul Islam - Biography Kazi Nazrul Islam ( Bengali : কাজী নজরুল ইসলাম Kazī Nazrul Islām (24 May 1899 – 29 August 1976), sobriquet Bidrohi Kobi (Rebel Poet) , known popularly as Nazrul , was a Bengali poet, musician and revolutionary who pioneered poetic works espousing intense spiritual rebellion against fascism and oppression. His poetry and nationalist activism earned him the popular title of "বিদ্রোহী কবি" Bidrohī Kobi (Rebel Poet) . Accomplishing a large body of acclaimed works through his life, Nazrul is officially recognised as the national poet of Bangladesh and highly commemorated in India. He also composed the Bangladesh military march "The Song of Youth", now known as "Chal Chal Chal". Born into a Bengali Muslim Quazi (Kazi) family, Nazrul received religious education and worked as a muezzin at a local mosque . He learned of poetry, drama, and literature while working with theatrical groups. After serving in the British I